সর্বশেষ :
জকিগঞ্জে নোমান হত্যা : আসামি সুমনের ৪ দিনের রিমান্ড, এবার স্ত্রীর নতুন মামলা প্রেমের পরিণতি অনশন: স্বামীর ঘরে উঠতে বিশ্বনাথের অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর আহাজারি ট্রেনের ৭০০ টিকিটসহ ৩ ‘কালোবাজারি’ আটক, ১৫ দিনের কারাদন্ড এসএমপি’র ৩২ঘন্টার অভিযান: সিলেট নগরীতে গ্রেফতার ৬৭ সিলেটে যে সকল রাস্তায় গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিল পুলিশ বুধবার থেকে এক ক্লিকে জামিননামা চলে যাবে কারাগারে হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় একজনের আমৃত্যু, ১৪ জনের যাবজ্জীবন এবার রেলওয়ে স্টেশনে ডিসির ঝটিকা অভিযান ১ কোটি টাকা মূল্যের জাল নোট ও বিদশেী অস্ত্রসহ র‌্যাবের হাতে আটক ১ জামালগঞ্জে হাওরের বুকে নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় — হেমন্তে পাও, বর্ষায় নাও ভরসা
কুলাউড়ায় আইনী জটিলতায় স্থগিত হলো ১৩ কোটি টাকার বালুর নিলাম

কুলাউড়ায় আইনী জটিলতায় স্থগিত হলো ১৩ কোটি টাকার বালুর নিলাম

কুলাউড়া প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় দীর্ঘদিন ধরে জব্দ করা কয়েক কোটি ঘনফুট বালু নিলামের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলো উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু আইনি জটিলতায় পূর্বনির্ধারিত গত ১৮ আগস্ট তারিখের নিলাম কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। অনিবার্য কারনবশত নিলাম কার্যক্রম স্থগিত করে ১৭ আগস্ট রাত ১১টার দিকে “উপজেলা প্রশাসন কুলাউড়ার ফেসবুক পেইজে” বিজ্ঞপ্তি দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন।

এর আগে স্থানীয় লোকজনের বিভিন্ন অভিযোগ ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নির্দেশে জমাটকৃত বালুর স্তুপ চিহ্নিত করে গত জুলাই মাসের প্রথম দিকে কয়েক কোটি ঘনফুট বালু জব্দ করেন হাজীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিউর রহমান।

নিলামযোগ্য বালুর পরিমাণ ২ কোটি ৯৬ লক্ষ ৪১ হাজার ১৯২ ঘনফুট। যার মূল্য ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৩৩ লাখ ৮৫ হাজার ৩৬৪ টাকা। এদিকে বালু নিলাম কার্য বাস্তবায়নের জন্য মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছিলো।

গত ১৪ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বালু নিলাম কমিটির আহবায়ক মো. মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে থেকে জানা যায়, গত ২ জুলাই কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের সালন, হাজীপুর ইউনিয়নের কনিমুড়া, হরিচক ও সাধনপুর নামক স্থানে ১৪৩০ বাংলা সনে মজুতকৃত মোট ২ কোটি ৯৬ লক্ষ ৪১ হাজার ১৯২ ঘনফুট অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু জব্দ করা হয়।

গত ৬ আগস্ট মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রাজস্ব শাখা থেকে স্পট নিলামের মাধ্যমে জব্দকৃত বালু বিক্রয় করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। টিলাগাঁও ইউনিয়নের সালন এলাকায় জব্দ করা ১ কোটি ৬২ লক্ষ ১৩ হাজার ৬৮০ ঘনফুট বালুর মূল্য ধরা হয়েছে ৭ কোটি ২৯ লক্ষ ৬১ হাজার ৫৬০ টাকা। হাজীপুর ইউনিয়নের কনিমুড়া এলাকায় জব্দ করা ৭৯ হাজার ৫০ ঘনফুট বালুর মূল্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৭২৫ টাকা। হরিচক এলাকায় ১ কোটি ২৯ লক্ষ ৮৬ হাজার ৯৩২ ঘনফুট বালুর মূল্য ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৮৪ লক্ষ ৪১ হাজার ১৯৪ টাকা। সাধনপুর এলাকায় ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ৫৩০ ঘনফুট বালুর মূল্য ধরা হয়েছে ১৬ লক্ষ ২৬ হাজার ৮৮৫ টাকা।

সূত্রে জানা যায়, জব্দকৃত বালুর মালিকানা দাবী করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন নং-১১৯৪৬ দায়ের করেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বাসিন্দা মনু নদীর বালুমহালের বর্তমান ইজারাদার নাজমুন নাহার লিপি। হাইকোর্টে চলমান রিটটি নিষ্পত্তি না হওয়ায় বালু নিলাম কার্যক্রম স্থগিত করতে বালু মহালের ইজারাদারের পক্ষে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ও কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মোশতাক আহমেদ।

স্থানীয় বাসিন্দা আবু সুফিয়ান, আব্দুর রাজ্জাক, খসরু মিয়া বলেন, আমরা জানি জব্দ করা বালু ১৪৩০ সনের। কিন্তু ওই বালু বর্তমান ইজারাদার নাজমুন নাহার তার দাবি করে প্রতিদিন রাতে কৌশলে নিয়মিত ইজারাকৃত মহালের উত্তোলিত বালুর সাথে জব্দকৃত বালুও গাড়ি দিয়ে বিক্রি করছেন। বিষয়টি আমরা ইউনিয়ন তহশিলদারকে জানালে তিনি এসে বালু বিক্রি বন্ধ করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, অনিবার্য কারনবশত জব্দকৃত বালুর প্রকাশ্য নিলাম কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি আইনি জটিলতার বিষয়টি উল্লেখ করেন। আইনী প্রক্রিয়া শেষ করে পুনরায় বালু নিলাম কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

উল্লেখ্য, মনু নদীর কটারকোনা বাজারসংলগ্ন বালুমহাল থেকে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে।

গত ১৪৩০ বাংলা সনে জেলা প্রশাসন থেকে ওই বালুমহাল ইজারা নেন পৃথিমপাশা ইউনিয়নের বাসিন্দা দীপক দে। বালু উত্তোলনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে আওয়ামীলীগের জেলা ও উপজেলার শীর্ষ নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে দিনরাত বালু উত্তোলন করে নদীর তীরবর্তী টিলাগাঁও ইউনিয়নের সালন, হাজীপুর ইউনিয়নের কনিমুড়া, হরিচক, সাধনপুরসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় কয়েক কোটি ঘনফুট বালু জমাট করেন দীপক দে। ওইসময় তিনি উত্তোলনকৃত বালু পুরোটা বিক্রি করেননি।

চলতি ১৪৩২ বাংলা সনে বালুমহালের ইজারা পান হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বাসিন্দা যুবলীগ নেতা সেলিম আহমদের স্ত্রী নাজমুন নাহার লিপি।

দীপক দে বর্তমান ইজারাদার না হলেও ব্যবসায়িক অংশীদার গড়ে তুলে পূর্বের জমাট করা কয়েক কোটি ঘনফুট বালু থেকে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রায় এক কোটি ঘনফুট বালু অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠে।

সরকারি নিয়ম রয়েছে, ইজারার নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে উত্তোলনকৃত রাখা বালু বিক্রি কিংবা সরিয়ে না নিলে ওই বালু সরকার পরবর্তীতে নিলামে বিক্রি করতে পারবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff